যাকাত আদায়ের হুকুম ও নিসাব পরিমান মাল ও তরককারীর পরিণতি

যাকাত আদায়ের হুকুম ও তরককারীর পরিণতি
মুফতি মনসুরুল হক সাহেব (দা:বা:)



যাকাত ইসলামের একটি অন্যতম রুকন, নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্দিষ্ট সম্পদের মালিকের জন্য যাকাত আদায় করা ফরজ।যাকাত অস্বীকার করলে ঈমান চলে যায়। যাকাতের ফরযিয়্যাত স্বীকার করে আদায় না করা হারাম ও কবিরা গুনাহ।

যারা যাকাত আদায় করবে না তাদের সম্পর্কে কোরআন হাদিসে অনেক কঠোর শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। যেমন সূরা তাওবায় আল্লাহ তা'আলা বলেন.....
(তরজমা) " যারা স্বর্ণ-রূপা (ধন-সম্পদ) জমা করে রাখে এবং আল্লাহ তা'আলার পথে খরচ করে না (অর্থাৎ যাকাত দেয় না) তাদেরকে কঠোর শাস্তির সংবাদ দিন।সেদিন জাহান্নামের আগুনে তাদের সম্পদ উত্তপ্ত করা হবে এবং সেগুলোর দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে।

সেদিন বলা হবে এগুলো সেই সম্পদ যার যাকাত না দিয়ে তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, সুতরাং এখন তার স্বাদ আস্বাদন করো।
(সূরা তওবা–৩৪/৩৫)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) হতে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করে না কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা তার গলায় সেই মালকে সাপ বানিয়ে ঝুলিয়ে দিবেন। অন্য এক হাদীসে আছে যে, সাপ তার দুই চোয়ালে দংশন করতে থাকবে এবং বলবে আমি তোমার ঐ সম্পদ যা তুমি দুনিয়াতে সঞ্চয় করেছিলে।
(তিরমিযী হাদিস নং ৬২, নাসায়ী হাদিস নং ২৪৪১, ইবনে মাজাহ হাদিস নং ১৭৮৪)

এছাড়াও বিভিন্ন হাদীসে আরো অনেক শাস্তির কথা উল্লেখ রয়েছে।


যাকাত যোগ্য সম্পদ ও যাকাতের পরিমাণ নিসাব

ঋণ ও মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ কিংবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য, অথবা ৫২.১/২তোলার রূপার মূল্য সমপরিমাণ নগদ টাকা বা ব্যবসায়ের মালের মালিক হলে চল্লিশ ভাগের একভাগ বা শতকরা আড়াই টাকা হারে যাকাত আদায় করতে হয়।
(আলমগীরী ১:১৮৭-১৯২)

উল্লেখযোগ্য যে কোন প্রকার সম্পদ স্বতন্ত্রভাবে নেসার পরিমাণ না হয়ে একাধিক প্রকারের অল্প অল্প হয়ে সমষ্টিগত ভাবে মূল্য হিসেবে ৫২.১/২ তোলার মূল্য সমপরিমাণ হলেও যাকাত প্রযোজ্য হবে।
(আল বাহরুর রায়েক ২:৪০০,৪০১)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url