রোজার গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল

রোজার গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল

মুফতি মনসুরুল হক সাহেব (দা:বা:)


* রমজানের প্রত্যেক দিনেই ঐ দিনের রোজার নিয়ত করা জরুরী।একদিনের নিয়ত পুরো মাসের রোজার জন্য যথেষ্ট নয়।
(দুররে মুখতার: ২/৩৭৯)

* যদি কেউ রোজার নিয়ত ব্যতীত এমনিতেই সারাদিন না খেয়ে থাকে, তাহলে এটা রোজা বলে ধর্তব্য হবে না।
(রদ্দুল মুহতার: ২/৩৭৭)

* সুবহে সাদিকের পর খানা-পিনা জায়েয নেই। আজান হোক বা না হোক। লোক মুখে যে প্রচলিত রয়েছে যে, সুবাহেসাদিক এরপরও আজান পর্যন্ত খাওয়া যায় তা সম্পূর্ণ ভুল।
(রদ্দুর মুহতার:২/৪১৯)

* রোজা অবস্থায় গোসল করলে রোজার কোন ক্ষতি হয় না। তবে কুলি করার সময় গড়গড়া করবে না এবং নাকে পানি দেয়ার সময় নাকের মধ্যে জোরে পানি টানবে না।
 (দুররে মুখতার: ২/৪১৯)

* রোজা অবস্থায় কাউকে রক্ত দিলে রোজার কোন ক্ষতি হয় না। যদি রক্তদাতার শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকে।
(রদ্দুল মুহতার:২/৪১৯)

* রমজান মাসের দিনে বা রাতে কেউ যদি বেহুশ হয়ে যায় এবং তা যদি কয়েকদিন বা অবশিষ্ট পুরো মাস পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে প্রথম যেদিন বেহুশ হয়েছে ওই দিন বাদ দিয়ে বাকি দিনগুলীর রোজা কাযা করতে হবে।
(দুররে মুখতার: ২/৪৩২)

* রমজান মাসে কেউ যদি পাগল হয়ে যায় তাহলে তার রোযা মাফ হয়ে যায়।তবে পুরো মাসের কোন অংশে সুস্থ হলে পূর্বের রোজাগুলোর কাযা করতে হবে।
(আল বাহরুর রায়েক: ২/৫০৭)

* হস্তমৈথুন করলে রোজা ভেঙ্গে যায় এবং তার কাযা আদায় করা জরুরি। এটা জঘন্য পাপকার্য। হাদীসে এই রূপ ব্যক্তির উপর লানত করা হয়েছে।
(দুররে মুখতার: ২/৩৯৯)

* যদি রোজা অবস্থায় দাঁত দিয়ে রক্ত বের হয়ে কণ্ঠনালীতে পৌঁছে যায় এবং তা পরিমাণে কম হয়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না। আর যদি রক্ত তো তোর সমান বা থুথু থেকে বেশি হয় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। এবং তার কাযা করতে হবে।
(দুররে মুখতার:২/৩৬৯)

* বাচ্চাকে দুধ পান করালে রোজার কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু নামাজ অবস্থায় দুধ পান করালে নামাজ ভেঙ্গে যায়।
(দুররে মুখতার: ২/৩৭১)

* সফরে যদি কষ্ট হয় তাহলে রোজা না রাখা জায়েয আছে বরং না রাখা উত্তম। আর সফরের কষ্ট না হলে রোজা রাখাই হল মুস্তাহাব। তবে রোজা রেখে ভাঙ্গা ঠিক নয়। কেউ যদি ভেঙ্গে ফেলে তাহলে কাফফারা আসবে কি না এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। যদিও গ্রহণযোগ্য মত হল যে, এই সূরাতে কাফফারা ওয়াজিব হয় না।
(আহসানুল ফাতাওয়া: ৪/৪৪)

* কেউ রোজা রাখার পর মারাত্মক অসুস্থ হয়ে গেলে অথবা পূর্বের রোগ বেড়ে যাওয়ার প্রবল ধারণা হলে রোজা ভাঙ্গা জায়েয আছে। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে।একান্ত কাজা করার শক্তি না পেলে উক্ত রোজার ফিদয়া দিতে হবে অর্থাৎ, প্রত্যেক রোজার বদলে একজন গরীব কে দু'বেলা খাওয়াতে হবে বা পুনে দু'সের আটা কিংবা তার মূল্য গরীবকে দিতে হবে।
(দুররে মুখতার: ২/৪২২)

* নাবালেগ ছেলে সন্তানদেরকে রোজা রাখার হুকুম করতে হবে, যদি তারা এর শক্তি রাখে এবং এর দ্বারা তাদের কোনো ক্ষতি না হয়। আর দশ বছর বয়সে রোজা রাখতে শুরু না করলে প্রয়োজনে প্রহার করা যাবে।
(দুররে মুখতার: ২/৪০৯)

* রমজানের দিনের বেলায় কোন ছেলে বা মেয়ে দেখলে বা কোন কাফের মুসলমান হলে কিংবা মুসাফিরের সফর শেষ করলে বাকী দিন খানা-পিনা থেকে বিরত থাকতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url