শবে কদরের করণীয় ও বর্জনীয় কাজ সমূহ

শবে কদরের করণীয় ও বর্জনীয় কাজ সমূহ

মুফতি মনসুরুল হক সাহেব (দা:বা:)


শবে ক্বদরে করণীয় কাজ সমূহ
 ১. এ পূণ্যময় রজনীতে অবহেলা না করে গুরুত্ব ও এখলাসের সাথে এবাদত বন্দেগিতে লেগে থাকা চাই। চায়না ফর নামাজ তেলাওয়াত জিকির আযকারে হোক কিংবা দু'আয় মাশগুল থাকার মাধ্যমে হোক।

 ২. নিজের জীবনের পাপরাশির কথা স্মরণ করে আল্লাহ তা'আলার নিকট কাকুতি-মিনতি ও রোণাজারির সাথে তওবা করা ও ক্ষমা চাওয়া।
(সূরা নূহ:১০)

 ৩. এখলাসের সাথে সোয়াবের আশায় উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে নেক আমলে লিপ্ত থাকা।
 (বুখারি হাদিস নং ১৯০১, মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং ১৭১৪৫)

 ৪. এ রাত্রিতে বেশি বেশি নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে থাকা— اللهم انك عفو تحب العفو فاعفوا عني،
(আমালুল য়াউমি ওয়াললাইলাহ হাদিস নং ৭৬৭, ইবনে মাজাহ হাদিস নং ৩৮৫০)

 ৫. উক্ত রাত্রির কিছু অংশে কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত নিমগ্ন থাকা। কিছু অংশে নফল নামাজ বিশেষ করে সালাতুত তাসবীহ আদায় করা। আর কিছু অংশে জিকির-আযকার দোয়া মোনাজাত করা।
(সূরা আনকাবূত:৪৫)

 শবে ক্বদরের বর্জনীয় কাজ সমূহ
 ১. মসজিদে নিঃপ্রয়োজনে মোমবাতি জ্বালানো ও আলোক-সজ্জা করা। কারণ এটা অপব্যয়। আর অপব্যয় করা নাজায়েয।
 (সূরায়ে আ'রাফ:৩১, বনী ইসরাইল:২৭)

 ২. জামাতের সাথে সালাতুত তাসবিহ তাহাজ্জত কিংবা অন্য কোন নফল নামাজ পড়া। কারণ নফল নামাজ জামাতের সাথে নাজায়েয।
(রদ্দুল মুহতার:১/৫৫২)

 ৩. ঘোষণা করে নাচতে সম্মিলিত দোয়ার আয়োজন করা। হ্যাঁ! ঘোষণা বা ডাকাডাকি ছাড়া এমনিতে যারা উপস্থিত ছিল তারা দোয়া করে নিলে তা জায়েয।

 ৪. এই রাত্রে মসজিদে প্রচলিত মিলাদ ও ক্বিয়াম করা। কারণ সুস্পষ্ট বিদ'আত।
 (মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং ১৭১৪৯)

 ৫. এত অনেক রাত্র পর্যন্ত জাগ্রত থাকা, যাতে ঘুমের তারণায় ফজরের জাআ'মাত ছুটে যায় কিংবা কাযা-ই হয়ে যায় বা এমন হয়ে যায় যে নামাজে কি সূরা কালাম পড়ছে তা নিজেরও খবর নেই।
(মুয়াত্তা ইমাম মালেক: হাদিস নং ১৫৫, আল ইসাবা: ৩/২০০)

 বি: দ্র: মসজিদে ইমাম ও খতিবগণের কর্তব্য ঐ দিন লম্বা সময় ওয়াজ ও বয়ানে না কাটানো। বরং তার আগে জুম'আয় বা কোন একদিন শবে ক্বদরের আহকাম বলে দেয়া। একান্ত ঐ দিনই কথা বলার প্রয়োজন হলে সংক্ষেপে এই রাত্রের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কিছু কথা বলে মুসল্লীদেরকে উৎসাহ দিয়ে ইবাদতের প্রতি নিবিষ্ট করার চেষ্টা করবে। তবে সর্ব অবস্থায় জ্বাল হাদিস ও ভিত্তিহীন ঘটনাবলী বর্ণনা থেকে বিরত থাকা চাই।
 (মুকাদ্দামায়ে মুসলিম: হাদিস নং ৭)

 পটকাবাজি, আতশবাজি ইত্যাদি কুসংস্কার থেকে বিরত থাকা। বিশেষ করে অভিভাবকদের কর্তব্য হল ছোটদেরকে উক্ত ব্যাপারে সাবধান করে দেয়া। এবং তাদের হাতে টাকা পয়সা না দেয়া। কারণ এই অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার কারণে নিজেদেরকে যেমন উক্ত রাতে অনেক ফজিলতপূর্ণ ইবাদত থেকে বঞ্চিত রাখা হয়, ঠিক তেমনি উত্তর জিনিসগুলোর বিকট ও ভয়ঙ্কর শব্দের দরুন আল্লাহর বান্দাদেরকে আতঙ্কের মাধ্যে ছেলে কষ্ট দেয়া হয়। তাই উক্ত শরীয়ত পরিপন্থী জঘন্য কাজে লিপ্ত হওয়া কবীরাহ গুনাহ ও হারাম।
(সূরা বাকারা: ১১৪, বানী ইসরাইল: ২৭)

 এই রাত্রকে উপলক্ষ করে অধিক ও উত্তম খানা ও তাবারকের আয়োজন থেকে বিরত থাকা। মসজিদে শিরনি, মিষ্টি ইত্যাদির আয়োজন থেকে বেঁচে থাকা।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url