নবী সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর বিভিন্ন প্রকার সুন্নাত
নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর
বিভিন্ন প্রকার সুন্নাত
বিভিন্ন প্রকার সুন্নত—
১. সকল কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বলা সুন্নাত।
২. মুসলমান মাত্রই প্রত্যেক মুসলমানের উপর কতগুলি হক আছে, (ক) সালাম করা, (খ) আহ্বান করলে সাড়া দেয়া, (গ) দাওয়াত করলে তা কবুল করা। (ঘ) হাঁচি দিলে জবাবে يرحمك الله বলে দোয়া দেয়া। (ঙ) রোগ হলে সেবা করা। (চ) মারা গেলে জানাযা ও দাফন-কাফনের শরীক হওয়া। (ছ) নিজেরা যা পছন্দ করে অন্যের জন্যও তাই পছন্দ করা।
৩. নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পথ চলার সময় রাস্তা হতে লোকদেরকে ধাক্কানো বা সরানো হতো না।
— (মুসনাদে আহমদ, হাঃ নং-১৪২৩৬)
৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর নিকট কেউ কিছু চাইলে তিনি কখনো না বলতেন না। অর্থাৎ প্রার্থিত জিনিস থাকলে তা দিয়ে দিতেন, আর না থাকলে অপারগতা প্রকাশ করতেন।
— (মুসনাদে আহমেদ, ডাঃ নং-১৪২৯৪)
৫. প্রিয় নবী সালাম আলাই সাল্লাম কারো মুখ হতে স্বীয় চেহারা মোবারক ফিরিয়ে নিতেন না যতক্ষণ না সে তার চেহারা ফিরিয়ে নিত।কোন ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কানে কানে কোন কথা বলতে চাইলে তিনি তার দিকে স্বীয় কান মোবারক বাড়িয়ে দিতেন এবং যতক্ষণ তার কথা শেষ না হতো, ততক্ষণ স্বীয় কর্ণ মোবারক সরিয়ে নিতেন না।
—(ইবনে মাজাহ-৩৭১৬)
৬. রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন পছন্দনীয় জিনিস হাসিল করলে এই দোয়া পড়তেন—
الحمدلله الذي بنعمته تتم الصالحات،
৭. পক্ষান্তরে মনের ইচ্ছার ব্যতিক্রম কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে এই দোয়া পড়তেন—
الحمد لله على كل حال،
৮. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে এই দোয়া পড়তেন—
يا حي يا قيوم برحمتك استغيث،
৯. হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা দৃষ্টি নিচু করে থাকতেন অধিক লাজুক হওয়ার কারণে তিনি কারো প্রতি দৃষ্টি ভরে তাকাতে পারতেন না।
—(শামায়িলে তিরমিযী পৃ:২)
১০. পিয় নবী (সাঃ) সবার সাথে মিলেমিশে থাকতেন, স্বাতন্ত্র্য মর্যাদা বজায় রেখে চলতেন না। মাঝে মাঝে তিনি হাসি-কৌতুকও করতেন। তবে সে কৌতুকও হত বাস্তবসম্মত। কাউকে কটাক্ষ করে বা অবাস্তব কথা বলে তিনি কোন কৌতুক করতেন না।
—(শামায়িলে তিরমিযী পৃ:১৫)
হযরত আনাস (রাযি.) হইতে বর্ণিত আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কেউ ওই সময় পর্যন্ত (পূর্ণ) ঈমানওয়ালা হতে পারবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত আপন মুসলমান ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ না করবে যা নিজের জন্য পছন্দ করে।
—(বুখারী)
হযরত আবু মুসা আশআরী (রাযি.) বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেছেন, তিন প্রকার লোকের একরাম করা আল্লাহ তায়ালার সম্মান করার অন্তর্ভুক্ত। প্রথম বৃদ্ধা মুসলমান, দ্বিতীয় ওই কোরআনে হাফেজ যে মধ্যপন্থার উপর থাকে, তৃতীয় ন্যায় পরায়ণ বাদশাহ।
—(আবু দাউদ)
ফায়দা: মধ্যপন্থার উপর থাকার অর্থ এই যে, কোরআন শরীফ তেলাওয়াতের এহতেমামও করে এবং রিয়াকারদের মত তাজবীদ ও হরফ সমূহ আদায় করার মধ্যে সীমালংঘন না করে।
—(বজলুল মজহুত)
হযরত উবাদা ইবনে সামেত (রাযি.) হতে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি আমাদের বড়দের সম্মান করে না, আমাদের ছোটদের ওপর দয়া করে না এবং আমাদের আলেমগণের হক বুঝে না, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।
—(মুসনাদে আহমাদ, তাবারানী, নাজমায়ে যাওয়েদ)
হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.) হতে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, ঈমানের স্বাদ তার হাসিল হয়ে যাক তার উচিত যেন একমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অন্য (মুসলমান) কে মহাব্বত করে।
—(মুসনাদে আহমাদ)
হযরত মুয়াজ (রাতি.) বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এরশাদ করতে শুনেছি যে, আল্লাহতালা সন্তুষ্টির জন্য পরস্পর একে অপরকে মহব্বতকারী আরশের ছায়াতে স্থান পাবে, যে দিন আরশের ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না। নবীগণ ও শহীদ হন তাদের বিশেষ মর্যাদা ও সম্মানের কারণে তাদেরকে ঈর্ষা করবেন।
—(ইবনে হিব্বান)